Product image
Share on:
আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসের ইতিকথা: আফগানিস্তান হতে আমেরিকা
লেখক : ব্রিগে. জেনারেল (অব:) এম. সাখাওয়াত হোসেন
ক্যাটাগরী : প্রবন্ধ
প্রকাশনী : পালক পাবলিশার্স
ভাষা : বাংলা
পৃষ্ঠা : ৩০০ পাতা
মুল্য : ০.০০৳
রেটিং :
(০)
কোন ডাউনলোড রেকর্ড নেই
Free Download
Related Product
সার সংক্ষেপ লেখক পরিচিতি
বইয়ের বিবরণ

৯ সেপ্টেম্বর ২০০১ সালে নিউ ইয়র্কের টুইন টাওয়ারে আল-কায়দার হামলা এবং পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে আমার এই বইটি রচিত হয়েছিল। এই বইটি উৎ পাঠকদের কাছে ব্যাপক সমাদ্রিত হয়েছিল এবং এখনও যথেষ্ট চাহিদা আছে বলে মনে করছি, বিশেষ করে যখন বিগত এক দশকের উপরে যুক্তরাষ্ট্র সর্বশক্তি প্রয়োগে আফগানিস্তানে আল-কায়দা এবং তাদের মদতদাতা বলে পরিচিত তালেবানদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। আমি আমার এই বইয়ের শেষের কথায় লিখেছিলাম-

“................আফগানিস্তানে আমেরিকার সামরিক অভিযান এনডিওরিং ফ্রিডম (Enduring Freedom) এই নামেই অভিযানের সূচনা হয়। এহেন বিশ্ব পরিস্থিতিতে অদূর ভবিষ্যতে আফগানিস্তান তথা মধ্য এশিয়ার কতখানি ফ্রিডম বা স্বাধীনতা থাকবে তা কেবল ভবিষ্যতই বলতে পারবে।”

আমার বইয়ের এই শেষাংশ অনুধাবন করলে পরিষ্কার হবে যে, বিশ্বের অনেক দেশে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসের প্রেক্ষাপটে স্বাধীনতা খর্ব হয়েছে। সমগ্র মধ্য এশিয়ার কথিত স্বাধীন দেশগুলোতে আমেরিকার সামরিক উপস্থিতি, আরব বসন্তের পরবর্তী ঘটনাগুলো, সিরিয়ায় চলমান সংকট, ইরাকের বেহাল অবস্থা, সোমালিয়া নামক দেশের অস্তিত্ব বিলীন হবার পথে, ওই দেশে আল-সাবাবের উত্থান এমনকি নাইজেরিয়ার মত তেল সমৃদ্ধ দেশে বোকোহারাম নামক গোষ্ঠীর উত্থান কয়েকটি উদাহরণ মাত্র। এসবের প্রেক্ষাপটেই উল্লেখিত দেশগুলোর আক্ষরিক অর্থে স্বাধীনতা ব্যাপকভাবে খর্ব হয়েছে এবং ক্রমাগত খর্ব হচ্ছে।

এই বই প্রকাশের পর হতে প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় অতিবাহিত হয়েছে, কিন্তু আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস এবং আল-কায়দার বিস্তৃতি থেমে থাকেনি। ২০১১ সালে পাকিস্তানের শহর এবোটাবাদে যুক্তরাষ্ট্রের স্পেশাল ফোর্সের অপারেশনে সিআইএ-এর একদার ব্লু আইভ বয় ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যু হলেও আল-কায়েদার বিস্তার থেমে থাকেনি; বরং আল-কায়দার নেতৃত্ব আরও বিস্তৃত হয়েছে। আল-কায়দা ইন এরেবিয়া, আল-কায়দা ইন ইরাক এবং আল-কায়দা ইন মাগবের নামে আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যে অত্যন্ত সক্রিয় রয়েছে। সিরিয়ায় আল-নুসরা, আল-কায়দার সংগঠন, বাশার আল আসাদের বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত, যে কারণে পশ্চিমা বিশ্ব সিরিয়ায় বাশার সরকারকে সরাসরি উৎখাত করতে পারছে না। অপরদিকে আরব বসন্তের মাধ্যমে কয়েকটি দেশে সরকার পরিবর্তনের পর ওই সব দেশে জঙ্গি তৎপরতা আরও বেড়েছে।

অপরদিকে আফগানিস্তানে তালেবানদের পতন হলেও বিগত ১৩ বছর আল-কায়দার মোকাবেলায় রত যুক্তরাষ্ট্রসহ ন্যাটো বাহিনী। আফগানিস্তানে রক্তপাত বন্ধ হয়নি। ২০১৪ সালের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। বিগত ১৩ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে কয়েক বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। হতাহত হয়েছে কয়েক হাজার সামরিক সদস্য, তথাপি তালেবানদের হামলা থামাতে পারেনি, যেমন পারেনি সোভিয়েত বাহিনী। অগত্যা তালেবানদের সাথে আপসরফার সিদ্ধান্তে আলোচনার পথ ধরেছে যুক্তরাষ্ট্র তথা যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত হামিদ কারজাই সরকার। পার্শ্ববর্তী দেশ পাকিস্তানে জন নিয়েছে তেহরিকে তালেবান পাকিস্তান বা টিটিপি। পাকিস্তানী বাহিনী যুদ্ধে রঙ দুর্গম অঞ্চলে। টিটিপি-এর সমর্থনে রয়েছে ওসামা উত্তর আল-কায়দা যার নেতৃত্বে রয়েছেন আইমান আল জওয়াহারী। বিগত তের বছরে বিশ্ব আরও সংকটময় হয়ে উঠেছে। দেশে দেশে জন্ম নিচ্ছে উগ্র ধর্মীয় গোষ্ঠী। বাংলাদেশও এর বাইরে থাকতে পারেনি।

বিশ্ব এখন আরও বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে পতিত হয়েছে। যে যুদ্ধ শুরু করেছিল আমেরিকা সেই যুদ্ধ এখন বিস্তৃত সারাবিশ্বে। এ হানাহানি কবে বন্ধ হবে কারও জানা নেই। মাত্র কয়েকদিন আগে (ফেব্রুয়ারি ২০১৪) তে প্রথমবারের মত আল-কায়দার প্রধান আইমান আল জওয়াহারীর কথিত হুমকি এসেছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। এমনিতেই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা তেমন শক্ত নয়। তাই ভবিষ্যতে ব্যবস্থাপনা আরও শক্ত না করলে অনবরত হুমকির মুখে থাকবে সমাজব্যবস্থা।

এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এই বইটি পাঠকদের বর্তমান সংকটের এক অধ্যায়ের ধারণা নিতে সক্ষম হবে বলে আমার বিশ্বাস। আগামীতে এই বইয়ের পুনঃসংস্করণের ইচ্ছা রইল।

তারিখ : ঢাকা। ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন

রিভিউ
রেটিং *
নাম *
রিভিউ *
ইমেইল *

মোট ০টি রেটিংস
চমৎকার
0
ভালো
0
মোটামুটি
0
চলনসই
0
নিম্নমান
0
বুক রিভিউ
কোন বুক রিভিউ নেই