| লেখক | : আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ | 
| ক্যাটাগরী | : ইতিহাস: শিল্পকলা ও সাহিত্য | 
| প্রকাশনী | : বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র | 
| ভাষা | : বাংলা | 
| পৃষ্ঠা | : ২৮২ পাতা | 
| মুল্য | : ০.০০৳ | 
| রেটিং | : 
                                                                                                
                                                                                                                                
                                                                                                                                
                                                                                                                                
                                                                                                                                
                                                                                        (০)
                         | 
| কোন ডাউনলোড রেকর্ড নেই | |
সে এক সময় এসেছিল এই দেশে, এই ঢাকায়, ষাটের দশক, আয়ুব খানের সামরিক শাসনের কাঁটাতারে বিদ্ধ, কবিতার তথা সাহিত্যের কামড়ে অস্থির যুবাদের পদভারে কম্পিত, বিশ্বব্যাপী মূল্যবোধ-ভেঙে-ফেলা প্রতিবাদী তারুণ্যের আন্দোলনের ধাক্কায় টলটলায়মান, সামাজিক-অর্থনৈতিক অবক্ষয়ের আঘাতে জর্জরিত।
নতুন সময়ের নতুন ভাষাকে প্রকাশ করবার তীব্র বাসনায় একত্রিত হয়েছিল কয়েকজন অতিতরুণ, বের করেছিল সাহিত্যপত্র কন্ঠস্বর (যার লেখকেরা পরবর্তীকালে বিখ্যাত হবেন ষাটের দশকের কবি-লেখক বলে, আবদুল মান্নান সৈয়দ কিংবা রফিক আজাদ, আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের মতো কেউ-কেউ দশকের গণ্ডি পেরিয়ে মহাকালের গায়ে খোদিত করবেন নিজের নাম, পরে এসে যোগ দেবেন নির্মলেন্দু গুণ বা আবুল হাসান)।
সেই কণ্ঠস্বর সম্পাদনা করা, প্রকাশ করা, তার জন্য অর্থসংগ্রহ করতে গিয়ে জিভ-বের-হয়ে-আসা গ্লানিকর কষ্টকর অধ্যবসায় চালিয়ে যাওয়া আর লেখক-সাহিত্যিকদের বুকভরা ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখার কেন্দ্রীয় ভূমিকাটি পালন করেছিলের কিছুটা অগ্রজ, সৃজনশীল সাহিত্যিক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।
ভালোবাসার সাম্পান সেই ঝঞ্ঝাক্ষুব্ধ সমুদ্রে সৃজনশীলতার নৌকা বয়ে নিয়ে যাওয়া নাবিকের স্মৃতিচারণার গল্প। এ গ্রন্থের কুশীলব হলেন সেদিনের তরুণ কবি-লেখকেরা, আজকের তরুণদের কাছে যাঁরা নায়কের আসনে অধিষ্ঠিত, যাঁদের প্রত্যেকের গল্প হতে পারে আলাদা আলাদা উপন্যাস।
আর গ্রন্থের নায়ক হলো স্বরাট সার্বভৌম সময়-মধ্যষাট থেকে মধ্যসত্তর-এমন সময়কাল একটা জাতির জীবনে আসে কদাচিৎই। এই বইয়ের প্রাণটুকু হলো ভালোবাসা, আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের মতো বিশালহৃদয় মানুষের প্রতিটা সৃজনশীল সাহিত্যিকের জন্য নিখাদ নিঃশেষ স্বতঃস্ফূর্ত ভালোবাসা এবং একই সঙ্গে শিল্প-সাহিত্য ও স্বদেশের জন্য একদল ভবিষ্যৎভাবনাবিহীন শৃঙ্খলমুক্ত তারুণ্যের অস্তিত্ব-কাঁপানো ভালোবাসা।
ভালোবাসার সাম্পান একই সঙ্গে ইতিহাস ও কিংবদন্তি, উপন্যাস ও স্মৃতিকথা; অনবদ্য আবেগদীপ্ত ও বুদ্ধি-ঝলকিত ভাষাশৈলীতে গাঁথা এ হলো আমাদের জাতির এক গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস, একটা সাহিত্যিক সম্প্রদায় বা একদল সাহিত্যিকের বেড়ে ওঠার হাহাকারের সঙ্গে যেখানে মিলেমিশে একাকার হয়ে আছে একটা জাতির জন্ম-চিৎকার।
এ গ্রন্থ আরম্ভ করলে শেষ না করে বন্ধ করা মুশকিল এবং এ গ্রন্থ হাতে পেলে সংগ্রহ-ছাড়া করা অসম্ভব।