লেখক | : অধ্যাপক মুহাম্মদ আবদুল হাই |
ক্যাটাগরী | : চিরায়ত উপন্যাস |
প্রকাশনী | : স্টুডেন্ট ওয়েজ |
ভাষা | : বাংলা |
পৃষ্ঠা | : ১২৫ পাতা |
মুল্য | : ০.০০৳ |
রেটিং |
:
(৫.০০)
|
কোন ডাউনলোড রেকর্ড নেই |
"বিলেতে সাড়ে সাতশ দিন" বইটির ভূমিকাঃ
বইটি গত শতকের মাঝামাঝিতে রচিত। মুহম্মদ আবদুল হাই রচিত এ বইটি অর্ধশতাব্দী পূর্বে ভ্রমণ কাহিনী হিসেবে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। ১৯৫০ সালের দিকে বহির্বিশ্বের ছবি বা কাহিনী বাংলাভাষায় খুব কমই বই হিসেবে মানুষের হাতে, এসেছে। মিলেনিয়াম যুগের সাথে সে যুগের আকাশ পাতাল পার্থক্য। আজ অর্থ থাকলেই পুরো বিশ্ব ঘুরে দেখা যায়। ঘরে বসেও বিশ্বকে জানা যাচ্ছে। সে সময় এত সহজভাবে তা সম্ভব ছিল না। বিলেত, আমেরিকা, জাপান ইত্যাদি বহির্বিশ্বে যেতে হলে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে মানুষকে। উচ্চতর ডিগ্রীর জন্য অনেক চেষ্টা করে বিদেশে যেতে হতো। আমার পিতা মুহম্মদ আবদুল হাই উচ্চতর ডিগ্রীর জন্য লন্ডন গিয়েছিলেন এবং তাঁর অধ্যবসায় ও মেধার জোরে ডিষ্টিংশনসহ উচ্চতর ডিগ্রী লাভ করে তৎকালীন বাংলাভাষায় ধ্বনিবিজ্ঞানকে রাজ-আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। এ ভাবে জ্ঞান মার্গের এক নতুন দিগন্ত আবিষ্কারের দ্বার স্বচেষ্টায় উন্মোচন করেছিলেন তিনি।
ধ্বনিবিদ মুহম্মদ আবদুল হাই তাঁর দীর্ঘ প্রবাস জীবনকে যেমন অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে অনুধাবন করেছিলেন, তেমনি তৎকালীন বৃটিশ সভ্যতাকেও উপলব্ধি করেছিলেন নিগূঢ় তাৎপর্যে। লন্ডনের প্রকৃতি, মাটির রূপরসগন্ধ, প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য ও দৈনন্দিন জীবনের মাঝে লুকিয়ে থাকা বহমান সভ্যতা, ঐতিহাসিক ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির নানা বিষয়কে তিনি লেখনীর মাধ্যমে ছবির মত ফুটিয়ে তুলেছেন এই গ্রন্থে।
আগেই বলেছি বইটি অর্ধশতাব্দী পূর্বে রচিত। কতখানি স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি ও গতিশীল মনের অধিকার জন্মালে এবং মানুষ ও সমাজ সম্পর্কে সংবেদনশীল হলে এমন লেখা সম্ভব হয়, গ্রন্থটি তারই একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। ইংল্যান্ডে লেখকের অবস্থানকালে সেখানকার সামাজিক রীতিনীতি ও জীবনযাত্রার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের পার্থিব দৃষ্টিভঙ্গিটি তিনি লক্ষ্য করেছেন একজন সমাজ বিজ্ঞানীর দৃষ্টিতে। স্বদেশানুরাগ ও স্বদেশের হিত চিন্তা তাঁর মধ্যে ছিল বলেই তৎকালীন বাংলাদেশের সাথে (সে সময়ের পূর্ব পাকিস্তান) তুলনা করে উন্নত বিশ্ব থেকে পিছিয়ে থাকা আমাদের দেশ ও জাতির দুর্বলতাকে তুলে ধরেছেন লেখক। মনে হয় উন্নত সভ্যতার আলো আমাদের দেশে তথা সমাজে এসে প্রবেশ করুক তাই তিনি চেয়েছিলেন।
বইটিতে একত্রিশটি পরিচ্ছেদ আছে। তৎকালীন সময়ের লন্ডনের নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে অত্যন্ত প্রাণবন্ত ভাষায় লিখে গেছেন লেখক।
বইটি দীর্ঘদিন পর পুনঃ মুদ্রণের উদ্দেশ্য হল লেখকের এমন একটি চমৎকার প্রাঞ্জল ভাষায় লেখা ভ্রমণকাহিনী বর্তমান প্রজন্মের হাতে তুলে দেয়া ও সেই সাথে অর্ধশতাব্দী পূর্বের ইংরেজ সমাজের চিত্র, এবং ইতিহাসের সাথে এখনকার পাঠকদের পরিচয় ব্যাপক ও গভীর করতে সাহায্য করা।
আজকের নতুন প্রজন্ম এ গ্রন্থখানি পাঠ করে লন্ডন তথা বিলেত ও বিলেতবাসী ইংরেজদের তৎকালীন ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ট সুন্দর ও আনন্দময় ধারণা গ্রহণ করে নিজেদের চিত্ত ও চিন্তার সমৃদ্ধি ঘটাতে সক্ষম হবে এ প্রত্যাশা রাখি।