লেখক | : সৈয়দ মুজতবা আলী |
ক্যাটাগরী | : রম্য সাহিত্য |
প্রকাশনী | : বিশ্ববাণী প্রকাশনী |
ভাষা | : বাংলা |
পৃষ্ঠা | : ২৭৪ পাতা |
মুল্য | : ০.০০৳ |
রেটিং |
:
(০)
|
কোন ডাউনলোড রেকর্ড নেই |
সৈয়দ মুজতবা আলী একদা যাত্রা করছিলেন ট্রেনে। পথিমধ্যে তার কামরায় এক গুণমুগ্ধ ভক্তের আগমন। অকৃত্রিম উচ্ছাস এর সাথে সেই ভক্ত লেখককে বরণ করে নেন ঐ ট্রেন এর গতিশীল কামরায়, শবনম সম্পর্কে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করে ফেলে লেখককে । এই ভক্তটির নাম ই শহর-ইয়ার। রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারের গৃহিণী। ক্ষণিকের এই আলাপেই মমতার আাধার এই রমণীটি আপন করে নেয় লেখককে। শহর ইয়ার কে নিয়েই পুরো বইটি। কি এমন অনন্য ব্যক্তিত্ব এই নারীর যে লেখক তাকে নিয়ে একটি বই ই লিখে ফেললেন? বইটি পড়লে নিশ্চয়ই মুগ্ধ হবেন লেখকের রচনাশৈলীর উপর যা একজন সাধারন মুসলিম ঘরণীর চিন্তা চেতনা, পার্সপেক্টিভের সাথে আমাদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। বাহির থেকে দেখে ততকালীন বাঙালী মুসলমান নারীর মানসিকতার ধারনা নেয়াটা একদমই অনুচিত, তাতে যে কতটা ফাঁক রয়ে যায় তা একদম চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন লেখক। অবশ্য তার স্বভাবসিদ্ধ গূঢ় রম্যরস ও বিদ্রূপের কোনো ভাটা ছিলো না। শহর ইয়ার এর চরিত্র টি একইসাথে সাহিত্য অনুরাগী, আবেগী, রহস্যময়ী এবং অনন্য, যেন লেখকের সাহিত্য হৃদয়ঙ্গম করার উপযোগী ভক্ত, অন্যন্য ভক্তদের উত্তরসূরী।
একটু উদ্বৃতি দিলাম
"কুঠারমালাধারীকে দেখে সমস্ত গাছ যখন কম্পান্বিত তখন বৃদ্ধ একটি গাছ বলল, 'এখনই কিসের ভয়? এখনও আমাদের কোনও গাছ বা বৃক্ষাংশ ওর পিছনে এসে যোগ দেয় নি'। শহর ইয়ার লিখেছে 'বড় হক কথা। কামারের তৈরি কুড়োলের সুদ্দুমাত্র লোহার অংশটুকুন দিয়ে কাঠুরে আর কী করতে পারে, যতক্ষন না কাঠের টুকরো দিয়ে ওই লোহায় ঢুকিয়ে হ্যান্ডিল বানায়। পুরুষজাত ওই লোহা; সাহায্য পেল মেয়েদের সহযোগিতার কাঠের হ্যান্ডিল। তাই দিয়ে যে মেয়েরই একটু 'বাড়' হয় তাকে কাটে, আর যেগুলো নিতান্ত চারাগাছ বা যেসব বছর-বিয়ানীরা গন্ডায় গন্ডায় বাচ্চা বিইয়ে জীবন্মৃত তাদের রেহাই দেয়। এইসব অপকর্মে যুগ যুগ ধরে সাহায্য করেছে মেয়েরাই। শুনেছি, সতীদাহের পূণ্যসঞ্চয় করার জন্য বিধবাকে প্ররোচিত করেছে সমাজাগ্রগণ্যা নারীরাই। "