লেখক | : ফররুখ আহমদ কবি |
ক্যাটাগরী | : কবিতা |
প্রকাশনী | : বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ বুক সোসাইটি লিমিটেড |
ভাষা | : বাংলা |
পৃষ্ঠা | : ৩৫৪ পাতা |
মুল্য | : ০.০০৳ |
রেটিং |
:
(০)
|
কোন ডাউনলোড রেকর্ড নেই |
এক সময় মধ্যবিত্ত বাঙালী গৃহে পুঁথি পাঠ করা হত। পুঁথি পাঠ করা হত কাহিনীর জন্য, রূপকের জন্য, অলৌকিকতার জন্য এবং অবাস্তব কাহিনী মাধুর্যের জন্য। এ সব কারণে পুঁথি পাঠ করতেন হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে। ডঃ সুকুমার সেন বলেছেন, তাঁর গৃহে প্রবীণরা মুসলমানদের পুঁথি পাঠ করে আনন্দ পেতেন। এগুলাে বাস্তব কাহিনী ছিল না। এগুলাে অবাস্তব লালিত্যে গঠিত হত। অধিকাংশ ছিল প্রেমের কাহিনী এবং সেই প্রেমের কাহিনীর মধ্যে পরীদের গল্প থাকতাে, জ্বীনদের তাৎপর্যময় আচরণ থাকতাে। শিক্ষিত অর্ধশিক্ষিত সকল মানুষ এগুলাে পাঠে আনন্দ পেত। এ পুঁথিতে জীবনচর্চা থাকতাে না, বাস্তব মানুষের আনাগোনা থাকতাে না, এগুলােতে অবিশ্বাস্য কাহিনী মানুষের চিত্তে আনন্দ দিত। বাংলাদেশে একটা সময় ছিল যখন আমাদের দেশে ইংরেজি চর্চা আরম্ভ হয়নি। সেকালেই পুঁথিগুলাে পাঠ হত। 'ইংরেজি চর্চার ফলে আমাদের দেশে জীবনে নৈপুণ্য এসেছে, বাস্তব মানুষের প্রেম-ভালবাসার কাহিনী এসেছে এবং প্রখর বাস্তবতার ইঙ্গিত এসেছে। কিন্তু পুঁথির কাহিনী এরকম ছিলনা। তাতে অবাস্তবতার ইঙ্গিত ছিল, আনন্দ ছিল এবং উচ্ছা ছিল, এগুলাে পাঠ করে মানুষের আনন্দ জাগতাে। কিন্তু এগুলােকে তারা বিশ্বাস করতাে না। এসব পুঁথির অবাস্তবতা মানুষের মনে একটি মাধুর্য সৃষ্টি করতাে। অষ্টাদশ-ঊনবিংশ শতাব্দীতে এগুলাে প্রচলিত হয়। উর্দুতে দাস্তান শ্রেণীর কাহিনী-কাব্য ছিল। বাংলা পুঁথির মূলে এই দাস্তানের কাহিনীগুলাে কাজ করেছে। গুলে বাকাউলি, শিরি-ফরহাদ, হাতেম তা'য়ী, আমির হামযা ইত্যাদি কাহিনী দাস্তানের অন্তর্ভুক্ত ছিল।