লেখক | : ফররুখ আহমদ কবি |
ক্যাটাগরী | : চিরায়ত কাব্য |
প্রকাশনী | : স্টুডেন্ট ওয়েজ |
ভাষা | : বাংলা |
পৃষ্ঠা | : ৬৪ পাতা |
মুল্য | : ০.০০৳ |
রেটিং |
:
(০)
|
কোন ডাউনলোড রেকর্ড নেই |
‘সাত সাগরের মাঝি’র কবি ফররুখ আহমদের নিজের ভেতরেই একজন মাঝি ছিলেন- নাবিকও বলা চলে; দুঃসাহসী ও পরাজয় মানতে অসম্মত। ১৯৪৪ সালে বইটি যখন প্রকাশিত হয়, কবির বয়স তখন মাত্র ছাব্বিশ। যৌবনের সেই প্রাণোদ্দীপনা পুরোপুরি রয়েছে এ বইতে। বস্তুত এটি একটি অনবদ্য রচনা। এ রকমের একটি বই তাঁর প্রজন্মের অন্য কোনো বাঙালী কবি লিখতে পারতেন না, লেখেনওনি; এমনকি ফররুখ আহমদ পরবর্তীকালে নিজেও আর লেখেননি; এটিই তাঁর প্রথম এবং শ্রেষ্ঠ বই; যদিও তিনি এরপরে আরও লিখেছেন, প্রচুরই বলা চলে। দ্বিতীয়বার কেন লিখতে পারলেন না, তার কারণ যেমন অন্তর্গত, তেমনি বস্তুগতও। বস্তুগতই অধিক মাত্রায়। সময়টি ছিল অস্থির; সেই সময়টাকে তিনি ধারণ করেছেন, তাকে অভিব্যক্ত করেছেন; ওই সময়টা তো আর দ্বিতীয়বার আসেনি। কিন্তু সময় আবার বৈরীও ছিল; বৈরিতার কথা এ বইতে আছে, পরে ওই বৈরিতা আরও বেড়েছে। ফররুখ আহমদ বদলাননি, তাঁর শিরদাঁড়া ছিল অত্যন্ত শক্ত; কিন্তু সময় বদলেছে, এই বদলানোকে তিনি আর ধারণ করতে পারেননি। তিনি ছিলেন ইসলামসম্মত সাম্যবাদে বিশ্বাসী, ওদিকে সময় এগুচ্ছিল পুঁজিবাদী কায়দায়। এর বিরুদ্ধে তিনি লড়েছেন; সে লড়াইয়ের ফল তাঁর পরবর্তীকালের রচনাতে আছে। ওই লড়াইটা তাঁর ভেতরকার রোমান্টিকতাকে পরাভূত করতে পারেনি বটে, তবে ত্যক্তবিরক্ত করেছে। তাঁর ছিল শুভ-অশুভের অনমনীয় বোধ, অশুভকে দেখে তিনি ক্রোধান্বিত হয়েছেন, তার বিরুদ্ধে ব্যঙ্গ রচনা লিখেছেন এবং একটি নাটকও লিখেছিলেন। কাব্য নাটক, সনেট, মহাকাব্যিক দীর্ঘ কবিতা সবই আমরা পেলাম; কিন্তু দ্বিতীয় একটি ‘সাত সাগরের মাঝি’ আর পাওয়া গেল না। নির্মম সময় ও সময়ের স্রোতের বিরুদ্ধে অবিরাম সংগ্রাম তাঁর জগৎটাকে সঙ্কীর্ণ করে দিল। ফলে সাগরে আর নতুন জোয়ার এলো না।