লেখক | : শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় |
ক্যাটাগরী | : উপন্যাস |
প্রকাশনী | : ডিয়ার প্রকাশন |
ভাষা | : বাংলা |
পৃষ্ঠা | : ৭৯ পাতা |
মুল্য | : ০.০০৳ |
রেটিং |
:
(০)
|
কোন ডাউনলোড রেকর্ড নেই |
"কাগজের বউ "বইটির প্রথমের কিছু অংশ:
ছোঁচা শব্দটা কোথেকে এল মশাই? ছ'চো থেকে নাকি? হাতটান শব্দটারই বা ইতিহাস কি? কিংবা দু কান-কাটা কথাটাই বা অমন অপমানজনক কেন?
অবশ্য অপমান কথাটারও কোনাে মানে হয় না। অপমান মনে করলেই অপমান। আমার যা অবস্থা তাতে অপমান গায়ে মাখতে যাওয়াটাও এক লাটসাহেবী শৌখিনতা।
সুবিনয়দের পিছনের বারান্দায় আমি শই। বারান্দাটা খারাপ নয়। বুক সমান দেয়ালের গাঁথনি, তার ওপরটা গ্রীল দেওয়া। বারান্দার অর্ধেকটা প্লাইউড দিয়ে ঘিরে খাওয়ার ঘর হয়েছে, বাকি অর্ধেকটায় এটো বাসনপত্র ডাঁই করা থাকে, মুখে ধােওয়ার বেসিন রয়েছে, কয়েকটা প্যাকিং বাক্স পড়ে আছে খালি। এইসব বাক্সে বিদেশ থেকে কেমিক্যালস আসে। বিদেশের জিনিস বলে বাক্সগুলাে বেশ মজবুত। দিনের বেলা প্যাকিং বাক্সগুলাে—মােট তিনটে—একটার ওপর আর একটা দাঁড় করানাে থাকে। রাত্রিবেলা ওগলে নামিয়ে আমি পাশাপাশি সাজিয়ে নিই। বক্সগুলাে সমান নয়, যার ফলে একট, উচ, নীচ, হয়। তা হােক, তা হােক। আমার কিছু অসুবিধা হয় না। একেবারে মেঝেয় শােওয়ার চেয়ে এটুকু উচ্চতা মন্দ কি? | বারান্দার লাগােয়া পাশাপাশি দুটো ঘর। একটা ঘরে সবিনয়ের বিধবা মা শােন খাটে, মেঝেয় শােয় যােল-সতের বছর বয়সের ঝি কুসুম। অন্য ঘরে সুবিনয় এক খাটে শােয়, অন্য ঋটে দুই বাচ্চা নিয়ে সবিনয়ের বৌ ক্ষণা। সামনের দিকে আরাে দুটো ঘর আছে। তার একটা সুবিনয়ের ল্যাবরেটরি, অন্যটা বসবার ঘর। কিন্তু সেইসব ঘরে আমাকে থাকতে দেওয়ার কথা ওদের মনে হয়নি। সবিনয়ের এক বােন ছিল এই সেদিন পর্যন্ত বিয়ে হচ্ছিল না কিছুতেই। যতই তার বিয়ের দেরী হচ্ছিল ততই সে দিনরাত মুখ আর হাত-পায়ের পরিচর্যা নিয়ে অসম্ভব ব্যস্ত হয়ে পড়ছিল। ছেলে-ছােকরা দেখলে কেমন হন্যের মতাে হয়ে যেত, এবং শেষমেষ আমার মতাে অপদার্থের দিকেও তার কিছুটা ঝকে পড়ার লক্ষণ দেখে আমি বেশ শঙ্কিত হয়ে পড়ি। একদিন তাে সে পরিষ্কার তার বউদিকে বলে দিল—এই শীতে উপলদা একদম খােল বারান্দায় শােয়, তার চেয়ে খাওয়ার ঘরটায় শুতে দাও না কেন? এ কথা যখন হচ্ছিল তখন আমি চার পাঁচ হাত দরে বসে সবিনয়ের মুখােমুখি খাওয়ার টেবিলে চা খাচ্ছি। চোরচোখে তাকিয়ে দেখি, রান্নাঘরের দরজায় দাঁড়ানাে সবিনয়ের বােন অচলার দিকে চেয়ে রান্নাঘরের ভিতরে টলেবসা ক্ষণা একট, চোখের ইংগিত করে চাপা ঘরে বলল—উঃ হ,!
আমিও ব্যাপারটা বুঝতে পারলাম। ঠিকই তাে! খাওয়ার ঘরে দেয়ালের