লেখক | : শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় |
ক্যাটাগরী | : চিরায়ত উপন্যাস |
প্রকাশনী | : বইপোকা পাবলিকেশন্স |
ভাষা | : বাংলা |
পৃষ্ঠা | : ৩৮ পাতা |
মুল্য | : ০.০০৳ |
রেটিং |
:
(০)
|
কোন ডাউনলোড রেকর্ড নেই |
‘অরক্ষণীয়া’ নামটির মধ্যেই বলে দেওয়া আছে উপন্যাসটির সমস্ত কিছু। ‘অরক্ষণীয়া’ হচ্ছে এমন মেয়ে যাকে আর বিয়ে না দিয়ে ঘরে রাখা যায় না। স্বল্প বেতনভুক্ত কর্মচারী প্রিয়নাথ আর দূর্গামণির একমাত্র মেয়ে জ্ঞানদা। শুধু মাত্র দেখতে কালো হওয়ার কারণে সমাজের কোন ঘরে বউ হিসেবে তার আশ্রয় হয় নি। উপরন্তু মেয়েকে বিয়ে না দেওয়ার কারণে প্রতি পদে পদে সমাজের রক্তচক্ষুর সম্মুখীন হতে হয় জ্ঞানদার পরিবারকে।
তাই দূর্গামণির মুখ দিয়ে শরৎচন্দ্র সমাজকে বলেছেন, “ওরে পোড়া সমাজ, তুই কুল, শীল, স্বভাব, চরিত্র কিছুই যদি দেখবি নে, মেয়ে শুধু কালো বলেই তাকে ঘরে ঠাঁই দিবিনে, তবে সে মেয়ের বিয়ে না হলেই বা বাপ-মাকে দন্ড দিবি কেন? এমনসময় আশার আলো হয়ে আসে অতুল। কিন্তু সেই কি জ্ঞানদাকে আশ্রয় দিলো শেষ পর্যন্ত? নাকি সময়ের স্রোতে সৌন্দর্যের মোহ ভুলিয়ে দিলো তাকে! সেই কাহিনী নিয়েই শরৎচন্দ্রের দরদভরা উপাখ্যান ‘অরক্ষনীয়া’।
নিতান্তই ছোট পরিসরে লেখা। এক বসায় শেষ করে ফেলবে যে কেউ। তৎকালীন সমাজের কলুষিত রূপ এখানে দৃশ্যমান। ব্যপারটা অনেকটা এরকম যে এক অসহায়কে কেউ একটু খেতে দিচ্ছেনা। অথচ যখন সে মরে পরে থাকবে, তখন সেই লাশের গন্ধে সবাই ছি ছি করবে। জ্ঞানদার জন্য সমাজ বা নিজের আপন চাচাদের মনেও কোন সহমর্মিতার ছিলোনা। দিনের পর দিন কী পরিমাণ মানসিক যন্ত্রণার মধ্য পৃথিবী ছাড়তে হলো দুর্গার বা কতটা কষ্ট বুকে চেপে নিজেকে সংয়ের মতো করে বুড়ো পাত্রদের সামনে গিয়ে জ্ঞানদার নিজেকে প্রদর্শিত করতে হয়েছে যেন কেউ তাকে নিজের ঘরে তুলে নেয় এবং দুর্গা এই দৃশ্যটা দেখে দুনিয়া থেকে যেতে পারে তা কেবল এই দুটি প্রাণী আর ঈশ্বরই জানত।
লিখাটি শরৎচন্দ্রের সমকালীন সমাজকে কটাক্ষ করে লিখা হলেও এটি কিন্তু সকল সময়ের জন্যই সত্য। সমাজ টাকার কালোকে স্বীকার করলেও গায়ের কালোকে একরকম অস্বীকারই করে!