লেখক | : সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় |
ক্যাটাগরী | : শিশু কিশোর |
প্রকাশনী | : আনন্দ পাবলিশার্স (ভারত) |
ভাষা | : বাংলা |
পৃষ্ঠা | : ৮১ পাতা |
মুল্য | : ০.০০৳ |
রেটিং |
:
(০)
|
কোন ডাউনলোড রেকর্ড নেই |
জোজো এসে কাকাবাবুকে বলল,গরমের ছুটি গুলো নষ্ট হচ্ছে। এখন কলকাতায় থাকার কোন মানে আছে? এবার আপনার ডাক পরেনি? চলেন তাহলে বার্সেলোনা যাই। সেখানে তিন দিন ধরে অন্য গ্রহের রকেট দেখা গেছে। হাতির সুরের মতো নাকের মানুষকে সেই রকেটের জানালা দিয়ে উকি মারতে দেখা গিয়েছে।
কাকাবাবুর কাছে বার্সেলোনা যাওয়ার মতো টাকা নেই। তিনি ঠিক করলেন এমন জায়গায় যাবেন যেখানে আগে কখনো যান নি। লটারি করা হলো কয়েকটা জায়গার নাম লিখে। উঠে এলো কালিকটের নাম। সেই কালিকট সেখানে ইওরোপের বনিক ভাস্কো দা গামা প্রথমে এসে জাহাজ ভিড়িয়েছিলেন।
শুরু হলো কাকাবাবুর কলিকট যাওয়ার যাত্রা।সাথে আছে সন্তু আর গোলবাজ জোজো। সন্তু আর জোজো জানে তার এমনিতেই বেড়াতে যাচ্ছে কিন্তু কাকাবাবুর উদ্দেশ্য অন্য। কিছু দিন ধরে তিনি অনেক চিঠি আর টেলিফোন পাচ্ছিলেন কলিকটে নাকি ভাস্কো দা গামার ভূত দেখা যাচ্ছে। কাকাবাবু ভূতে বিশ্বাস করেন না। কিন্তু এতোগুলো মানুষতো আর ভূল বলবেন না। কিছু একটা হয়তো ঠিকই দেখা যায়। কিন্তু সেটা কি? সেটা জানতে গিয়ে কাকাবাবু জড়িয়ে পরেন চন্দনদস্যুর সাথে।
এবারের গল্প তেমন কোন ইতিহাস জানতে পারিনি। তবে কিছু প্রবাদ বাক্য এবং তাদের মানে সম্পর্ক জানতে পেরেছি। যেমন, সাধলে জামাই খায় না কাঁঠাল, ভুচরো নিয়ে টানাটানি, চক্ষুকর্ণের বিবাদ ভঞ্জন এবং কাকতালিয় শব্দের মানে কি? কোথা থেকে এই শব্দের জন্ম? এতো সুন্দর করে এ গুলো বুঝানো হয়েছে যে একবার পড়লে সহজে ভুলে যাবে না কেউ।
কাকাবাবু সিরিজের যেমন ভালো দিক আছে তেমনি খারাপ দিকও আছে বলে মনে করি আমি। কাকাবাবু খুবই অহংকারী একজন মানুষ। আত্মবিশ্বাসীও। কেউ কেউ বাবুর মতো হতে চাইবে হয়তো। তখন তারা হয়তোবা অহংকারী হয়ে উঠবে। আর অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস কখনো কখনো ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে নিজের জন্য। কাকাবাবুর ক্ষেত্রে হয়তো হয়নি কিন্তু অন্যকারো যে হবে না এমন তো নয়।
জোজো চরিত্র খুব মজার। জোজোকে অনেকটা জোকার হিসেবে রাখা হয়েছে। সে নানা ভাবে পাঠকদের হাসায়। সে মিথ্যে এমন করে বলে যেন সত্যিই বলছে। জোজোকে আমার ভালো লাগে। তার মিথ্যে বলার ক্ষমতা আমাকে মুগ্ধ করে এবং মনে করিয়ে দেয় টেনিদা কিংবা ঘানাদার কথা। আর আমি মনে মনে আফসোস করি,'ইশ্ এভাবে যদি আমিও “মিথ্যা” গল্প বানাতে পারতাম!'
এ থেকে বুঝা যায় জোজো আমাদের মিথ্যে বলতে উৎসাহ দেয়।
গল্পটি বেশ ছোট এবং দ্রুত শেষ হয়ে গেছে। কাকাবাবু সিরিজের অন্য গল্প গুলো থেকে এটাকে বেশ ভালো বলা যায়। এমন একটা প্যাচে ফেলা হয়ে ছিল এবার কাকাবাবুকে ভেবেছিলাম এখান থেকে বের হতে কষ্ট হবে অনেক। কিন্তু কাকাবাবু বুদ্ধির জোরে এমনভাবে বের হয়ে এলো যে মুগ্ধ হতেই হলো। তাই এটার রেটিং ৪.৫/৫ দেয়াই যায়।